বৃহস্পতিবার এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত সঞ্জয় কুমার ভার্মা অভিযোগ করেছেন, কানাডার ভারতীয় কমিউনিটির নেতা ও কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে, এবং তিনি নিজেও হুমকির শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, "সম্প্রতি হোলির সময় আমাকে দাঁড়কাক হিসেবে সাজিয়ে একটি পোস্টার প্রকাশ করেছে খালিস্তান সমর্থকরা, এবং আমার কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়েছে। আরেকটি পোস্টারে দেখানো হয়েছে, একদল লোক আমার দিকে বন্দুক তাক করে আছে। এসব কর্মকাণ্ড কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়।"
ভার্মা বলেন, "আমরা কয়েকবার কানাডার সরকারের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েছি, কিন্তু তারা এসব অভিযোগকে গুরুত্ব দেয়নি।" কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, "কানাডার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ট্রুডোর জনপ্রিয়তা কমছে, তাই তিনি এখন খালিস্তানপন্থিদের ওপর ভর দিয়ে এগোতে চাইছেন। ট্রুডো যে সব পদক্ষেপ নিয়েছেন, সেগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।"
খালিস্তান আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, খালিস্তান শব্দটি পাঞ্জাবী 'খালসা' থেকে এসেছে, যার অর্থ 'পবিত্র'। ১৬৯৯ সালে শিখ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মগুরু গোবিন্দ সিং পৃথক রাষ্ট্রের দাবি করেন, যার নাম ছিল খালিস্তান। সেই রাষ্ট্রের সীমানা ছিল দিল্লি থেকে লাহোর পর্যন্ত।
ব্রিটিশ শাসনামলে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের পাশাপাশি শিখরাও খালিস্তানের দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন, কিন্তু তা সফল হয়নি। গত শতকের সত্তর ও আশির দশকে ভারতে খালিস্তান আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে, যার ফলস্বরূপ ১৯৮৪ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী নিহত হন।
ভারত সরকার আন্দোলনকে শক্ত হাতে দমন করে, কিন্তু খালিস্তানপন্থি শিখরা কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে গিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
গত জুনে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় খালিস্তানপন্থি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার গুলিবিদ্ধ হন, যিনি ভারত সরকার দ্বারা তালিকাভুক্ত এক ফেরার সন্ত্রাসী ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারতকে দায়ী করে কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেন, তার দেশের গোয়েন্দারা ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছেন। তবে নয়াদিল্লি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, ট্রুডো কোনো তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই এ অভিযোগ করেছেন।
আরো নিউজ পেতে totthokontho সাথে থাকুন